আমি একজন মেয়ে,আমার কোনো ফ্রেন্ড নেই, সারাদিন মিলে কারো সাথে কথা হয়না সেরকম,আমি যখন দেখি অন্যরা বন্ধুবান্ধব মিলে কোথাও ঘুরতে যায়,এটা করে ওটা করে তখন খুব কান্না পায়,আমার কাছে রিলেশন করার অনেক proposal আসে, কিন্তু আমি হারামে জড়াবো না বলে ছেলেদের থেকে দূরে থাকি,,আমি আমার পড়াশোনা নিয়েও খুবই depressed, নিজের স্বপ্ন, নিজের ফ্যামিলির স্বপ্ন, কোনোটাই পূরণ করতে পারছি না,,সব কিছু নিয়ে আমার দিনকাল জানি কিরকম কাটতেছে,আমার মেসমেটরা প্রতিদিন বাইরে ঘুরতে যায়,আমি একা রুমের এক কোণে পড়ে থাকি,,আমার কষ্টগুলো কাওকে বলতে চাইলেও সেই মানুষ নেই,,আজকে কেনো জানিনা মনটা বেশি খারাপ,ঠিক কোন কারণে খারাপ ঐটাও জানিনা,,সব মিলিয়ে আমি জানি কিরকম আছি,,আমি কি করবো এখন কিচ্ছু বুঝতেছি না

তোমার কথাগুলো পড়ে সত্যিই বুঝতে পারছি—তুমি অনেক কিছু একা একা বহন করছো। এমন অবস্থায় মন খারাপ হওয়া, কান্না আসা, ভিতরে এক ধরনের ভারী শূন্যতা—এসব পুরোপুরি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। তুমি দুর্বল নও, বরং অনেকটা একা লড়াই করছো বলেই এটা হচ্ছে।

আমি তোমার পাশে আছি—যতটা পারি কথা শুনবো, তোমাকে বুঝবো। ❤️


🌸 যে অনুভূতি তুমি বলেছো—ওগুলো খুব বাস্তব এবং খুবই মানবিক

১. বন্ধুহীনতা ও একাকীত্ব

চারপাশে সবাইকে হাসতে, ঘুরতে, মজা করতে দেখা—আর নিজেকে আলাদা লাগা—এটা সত্যিই কষ্ট দেয়।
কিন্তু এটা মনে রেখো: তোমার জীবনের এই সময়টা স্থায়ী নয়।
বন্ধু হতে সময় লাগে, সঠিক মানুষ খুঁজতে আরও বেশি সময় লাগে।

তুমি খারাপ নও, তুমি অসামাজিক নও, তুমি শুধু সঠিক মানুষ পাওনি এখনো।


২. রিলেশন এ না যাওয়া—এটা তোমার শক্তি

তুমি নিজের নীতি ধরে রেখেছো, হারামের থেকে দূরে থাকছো—এটা কোনো দুর্বলতা না।
আজকাল সবাই সহজে ভেঙে যায়, অথচ তুমি নিজেকে সামলাচ্ছো—এটা প্রমাণ তুমি চরিত্রবান ও শক্তিশালী।


৩. পড়াশোনা নিয়ে চাপ

যখন মনের অবস্থা খারাপ থাকে, তখন পড়াশোনা প্রভাবিত হওয়াই স্বাভাবিক।
এটা মানে এই নয় যে তুমি আর কিছুই পারবে না।
তুমি শুধু ক্লান্ত। তুমি শুধু সাহায্য চাও। তুমি শুধু একটু শান্তি চাও।

এরকম সময়ে একদম কেউ পাশে না থাকলে চাপ আরও বাড়ে।


৪. চোখের সামনে সবাই ঘুরে বেড়ায় আর তুমি রুমে একা

এটা সত্যিই কঠিন।
তোমার মনে হচ্ছে তুমি পিছিয়ে পড়ছো, কিন্তু বাস্তবে কেউই তোমার মতো লড়াই করছে না—তুমিই নিজের ভিতরের যুদ্ধ লড়ছো।


🌼 এখন তোমার করণীয় (ধীরে ধীরে, একসাথে নয়)

১. মনটা এখন খুব খারাপ—এটা দমিয়ে রেখো না

কান্না করলে করো।
শরীর চাপ কমাতে দেয়।
এটা দুর্বলতার লক্ষণ নয়—এটা মানুষের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।


২. কারো সাথে বন্ধুত্ব শুরু করা—শুধু খুব ছোটভাবে

বন্ধু বানাতে গেলে বড় কিছু করতে হয় না।
যেমন—

  • রুমমেটকে জিজ্ঞেস করো: “তুমি বাইরে যাচ্ছো? ভালো লাগছে দেখে।”
  • লাইব্রেরির কারো সাথে ছোট্ট হাসি
  • মেসের কারো সাথে ১–২ লাইন কথা

শুরু এভাবেই হয়।


৩. পড়াশোনার জন্য ছোট রুটিন

বড় রুটিন তৈরি কোরো না।
শুধু—

  • প্রতিদিন ৩০ মিনিট একটা টপিক
  • নোট কপি করা
  • বা পুরানো লেকচার দেখা

তুমি দেখবে, ধীরে ধীরে গতি বাড়বে।


৪. নিজের প্রতি একটু নম্র হও

নিজেকে এত চাপ দিও না।
তুমিও মানুষ।
তোমারও কষ্ট লাগবে।
তোমারও বিশ্রাম দরকার।


🌙 সবশেষে—তুমি একা নও

আজ তুমি আমাকে লিখেছো—এর মানে তুমি সাহায্য চাইছো, এবং এটা সাহসী সিদ্ধান্ত।
তুমি চাইলে আমি তোমার সাথে কথা বলবো, তুমি যেভাবে অনুভব করছো—সব শুনবো।

Leave a Comment